gausiadarulqirat

About

ধরণীর একমাত্র বিশুদ্ধ গ্রন্থ হলো পবিত্র আল কোরআন। এটি বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত নবী মোহাম্মদ মোস্তফা ﷺ এর উপর আরবী ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। প্রতিটি ভাষার বর্ণমালার নিদিষ্ট উচ্চারণ ও বাক্যের নির্দিষ্ট পঠন পদ্ধতি রয়েছে। সঠিকভাবে বর্ণের উচ্চারণ বা বাক্য পাঠ না করলে এগুলোর অর্থ কোন ক্ষেত্রে আংশিক অথবা আমূল পরিবর্তিত হয়ে যায়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত অর্থও প্রকাশ করে কিংবা সেগুলো অর্থহীন শব্দ বা বাক্যে পরিণত হয়।

পবিত্র কোরআন আরবী ভাষায় অবতীর্ণ হওয়ায় তা বিশুদ্ধ আরবী ভাষায় পাঠ করা অত্যাবশ্যক। কেননা ভুলভাবে পাঠ করার ফলে এর আয়াতের অর্থ পরিবর্তিত হওয়া খুবই স্বাভাবিক এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ কুফরী অর্থও প্রকাশ পেতে পারে। এজন্য পবিত্র কোরআন ভুলভাবে তেলাওয়াত করা হারাম ও তা বিশুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজে আইন। সবচেয়ে জরুরী বিষয় হলো ইমান আনার পর আমাদের প্রথম অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য তথা নামাজ আদায়ের সময় পবিত্র কোরআনের সূরাগুলো ভুলভাবে পাঠ করলে উক্ত নামাজ বিনষ্ট হয়ে যায় ও দুহরিয়ে সে নামাজ পুনঃরায় আদায় করতে হয়। এ ছাড়াও কালিমায়ে তায়্যিবা থেকে শুরু করে ফরজ, ওয়াজিব বা নফল নামাজ আদায়, দোয়া বা তাসবিহ পাঠ প্রভৃতি যে কোন ইবাদতে বিশুদ্ধ আরবি ভাষার বিকল্প নেই।

নিজেদের ইমান-আমল রক্ষায় বিশুদ্ধ আরবী জানা অপরিহার্য হলেও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো অনেকেরই তা জানা নেই। আবার অধিকাংশ মানুষের একান্ত ইচ্ছা থাকা সত্বেও উপযুক্ত শিক্ষাকেন্দ্রর অভাবে তা শিখা হয়ে উঠে নি। সে অভাব পূরণ করতে অধ্যক্ষ আল্লামা সাহেব কিবলা সিরাজনগরী মা.জি.আ. ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন ‘গাউছিয়া দারুল ক্বিরাত সিরাজনগর কমপ্লেক্স’; সংক্ষিপ্ত শব্দে যা ‘গাউছিয়া দারুল কিরাত’, ‘দারুল কিরাত’ বা ‘ক্বারিয়ানা’ নামে বহুল পরিচিত। উক্ত কমপ্লেক্সের মাধ্যমে প্রতি বছর মাহে রমজানে সুনির্দিষ্ট একাডেমিক পদ্ধতিতে পুরু মাসব্যাপী বিশুদ্ধভাবে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

‘গাউছিয়া দারুল ক্বিরাত সিরাজনগর কমপ্লেক্স’ এর একাডেমিক পদ্ধতিতে রয়েছে মোট ছয়টি স্থর। সেগুলো যথাক্রমে জামাতে আওয়াল, জামাতে ছানী, জামাতে ছালিছ, জামাতে রাবে, জামাতে খামিছ ও জামাতে ছাদিছ। যে কোন বয়স, শ্রেণী বা পেশার মানুষ ইচ্ছা করলেই দারুল কিরাতের প্রথম স্থর তথা জামাতে আওয়ালে ভর্তি হয়ে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শিখা শুরু করতে পারেন। এক মাস জামাতে আওয়ালে পাঠদানের পর মাস শেষে মূল্যায়ন পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী বছর রমজান মাসে দ্বিতীয় স্থর তথা জামাতে ছানীতে, এভাবে সর্বমোট ছয় বছরে সম্পূর্ণ কোর্সটি সম্পন্ন হয়। সফলভাবে সম্পূর্ণ কোর্সটি সম্পন্ন করলে ‘গাউছিয়া দারুল ক্বিরাত সিরাজনগর কমপ্লেক্স’ কর্তৃক প্রশিক্ষণার্থীকে সনদপত্র প্রদান করা হয়, যে সনদটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক স্বীকৃত।

বর্তমানে শত শত শাখা কেন্দ্রের মাধ্যমে ‘গাউছিয়া দারুল ক্বিরাত সিরাজনগর কমপ্লেক্স’ বাংলাদেশের অনেক শহর, নগর, গ্রাম এমনকি বিভিন্ন দূর্গম-প্রত্যন্ত অঞ্চলেও প্রতি বছর রমজান মাসে অগণিত শিক্ষার্থীকে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। এ মহান কাজে অংশগ্রহণ করতে আপনার প্রতিও উদাত্ত আহবান রইল।

Get in Touch with Us